বীরপুরুষ
![]() |
| বীরপুরুষ |
মনে করো যেনো বিদেশ ঘুরে
মাকে নিয়ে যাচ্ছি অনেক দূরে।
তুমি যাচ্ছো পালকিতে মা চড়ে
দরজা দুটো একটুকু ফাঁক করে,
আমি যাচ্ছি রাঙা ঘোড়ার 'পরে
টগবগিয়ে তোমার পাশে পাশে।
রাস্তা থেকে ঘোড়ার খুড়ে খুড়ে
রাঙা ধুলোয় মেঘ উড়িয়ে আসে।
সন্ধে হলো,সূর্য নামে পাটে,
এলেম যখন জোড়াদিঘির মাঠে।
ধূ ধূ করে যেদিক পানে চাই
কোনোখানে জনমানব নাই,
তুমি যেনো আপন মনে তাই
ভয় পেয়েছো- ভাবছো "এলেম কোথা,
আমি বলছি, ভয় করো না মা গো,
ঐ দেখা যায় মরা নদীর সোতা।
আমরা কোথায় যাচ্ছি কে তা জানে—
অন্ধকারে দেখা যায় না ভালাে।
তুমি যেন বললে আমায় ডেকে,
দিঘির ধারে ওই-যে কিসের আলাে!’
এমন সময় ‘হারে রে রে রে রে
ওই যে কারা আসতেছে ডাক ছেড়ে।
তুমি ভয়ে পালকিতে এক কোণে
ঠাকুর-দেবতা স্মরণ করছ মনে,
বেয়ারাগুলাে পাশের কাঁটাবনে
পালকি ছেড়ে কাপছে থরােথরাে।
আমি যেন তােমায় বলছি ডেকে,
‘আমি আছি, ভয় কেন মা করাে!”
![]() |
| বীরপুরুষ |
তুমি বললে, “যাস নে খােকা ওরে,
আমি বলি, দেখাে-না চুপ করে।'
ছুটিয়ে ঘােড়া গেলেম তাদের মাঝে,
ঢাল তলােয়ার ঝনঝনিয়ে বাজে,
কী ভয়ানক লড়াই হলাে মা যে,
শুনে তােমার গায়ে দেবে কাঁটা।
কতাে লােক যে পালিয়ে গেল ভয়ে,
কতাে লােকের মাথা পড়ল কাটা।
এত লােকের সঙ্গে লড়াই করে,
ভাবছ খােকা গেলই বুঝি মরে।
আমি তখন রক্ত মেখে ঘেমে বলছি এসে,
‘লড়াই গেছে থেমে,
তুমি শুনে পালকি থেকে নেমে
চুমাে খেয়ে নিচ্ছ আমায় কোলে বলছ,
‘ভাগ্যে খােকা সঙ্গে ছিল কী দুর্দশাই হতাে তা না হলে!’
(সংক্ষেপিত)


Post a Comment